কাউকে যদি বলা হয়, কোনটা ছাড়া আপনি চলতে পারবেন না। সে যদি মোটামুটি ৩-৪ টার কথা বলে, তার মধ্যে অবশ্যই মোবাইল ফোন থাকবে, আমার মনে হয়। কারণ মোবাইল ফোন ছাড়া আসলেই বর্তমান যুগে আমাদের চলা অসম্ভব। তাহলে সেই মোবাইল ফোন কেনার আগে একটু বাচ-বিচার করা লাগে কিনা?
আসুন দেখি কোন ১০ টি বিষয় মোবাইল ফোন কেনার আগে আমাদের ভেবে দেখা উচিত-
১. বাজেটঃ মোবাইল কেনার আগে আমার মনে হয়, সবার বাজেটটা আগে ভাবা উচিত। কারণ একজন বাজেটের উপর ভর করেই- দেখতে পারে, ঐ বাজেটের মধ্যে কোন কোন ফোন তার প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে পারবে। না ভালো দামের ফোন পছন্দ করে তো লাভ নেই, যদি আমাদের বাজেটের সাদ্ধে সেটা না থাকে।
২. স্ক্রিনঃ কেউ বড় স্ক্রিন ব্যবহার করতে পছন্দ করে, আবার কেউবা ছোট। সেহেতু আপনার পছন্দ অনুসারে আগেই ভেবে রাখুন ৩.৫” নাকি ৫” স্ক্রিনের ফোন আপনি নিবেন। তবে ৩.৫” থেকে ৪” হল স্ট্যান্ডার্ড স্ক্রিন। কারণ স্ক্রিন যত বড় হবে আপনার ফোনের চার্জও কিন্তু কম থাকবে। আর চার্জ কিন্তু স্মার্ট ফোনের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
৩. ব্যাটারিঃ একটা ফোনের জন্য ব্যাটারি সীমা বা চার্জ স্থায়িত্ব খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আপনি বাইরে থাকলে বা ভ্রমনে গেলে এটা আপনাকে খুব বেশি ভোগাতে পারে। সেহেতু ব্যাটারির যেন মেগা অ্যাম্পিয়ার খুব ভালো এবং স্থায়ী হয় এটা খেয়াল করবেন।
৪. কীবোর্ডঃ অনেকে টাচে কাজ করে মজা পান না, আবার অনেকে কীবোর্ড চুজ করেন না।
এক্ষেত্রে আগে ভেবে নিবেন, কোনটা আপনি চান। কারণ এটা খুব জরুরী। তবে এখন মানুষ আর কীপ্যাড ফোন পছন্দ করতে চাই না। কারন গেম খেলার জন্য টাচ ফোন খুব স্বাচ্ছন্দ্যময়। সেহেতু টাচ ফোন আপনি চুজ করবেন আশা করি।
৫. ক্যামেরাঃ ফোনে ভালো ক্যামেরা সবাই এখন পছন্দ করেন। কারণ ক্যামেরা হল।আপনার স্মৃতির ফ্রেম। আবার আলাদা ক্যামেরা নিয়ে সবসময় ঘরাঘুরি করা অনেক ঝামেলা। সেহেতু
আপনার যদি স্মার্টফোনে ভালো ক্যামেরা থাকে তাহলে আপনি টুকটাক ছবি উঠানোর কাজ
ভালোভাবে মেটাতে পারবেন। তাছাড়া এখন আবার সেকফির যুগ। এজন্য আপনি এটা ভেবে দেখবেন ক্যামেরা কতো মেগা-পিক্সেল হলে, আপনি আপনার কাজ মেটাতে পারবেন। তবে মিনিমাম ৫ মেগার নিচে হলে ক্যামেরা ভালো হয় না। যেহেতু সেলফির যুগ সেহেতু ফ্রন্ট ক্যামেরাও
ভালো ক্লিয়ার কিনা, দেখে নিবেন। ফ্রন্ট ক্যামেরা মিনিমাম ২ মেগা পিক্সেলের নিচে হওয়া উচিৎ না। যদি আপনি খুব বেশি সেলফি প্রিয় হন, তবে আরও ভালো ফ্রন্ট ক্যামেরা নিবেন।
৬. ইন্টারনেটঃ আপনার ফোনে ২জি, ৩জি নাকি ৪জি চান, এগুলো দেখে নিবেন। কারণ যারা ফোনে নেট ইউজ করতে চান, বা দিনের বেশির ভাগ সময় বাইরে বাইরে থাকেন, তাহলে ভালো নেট ব্যবহার করা যায় এমন ফোন নিবেন অবশ্য,
কারন আপনার বাইরে থেকেও অনলাইন জগতে এই স্মার্টফোন আপনাকে যোগাযোগ সহজ করে দিবে।আর যারা বেশি ফেসবুক পাগল তাদের জন্যও এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া ওয়াই-ফাই ও
আছে কিনা দেখা উচিত। এখন অনেক জায়গায় ওয়াই-ফাই আছে, সেহেতু সেসব জায়গায় আপনি ফ্রিতে নেট ব্যবহার করতে পারবেন।
৭. মেমোরিঃ আপনার ফোনের RAM কতো,
ইন্টারনাল মেমোরি কত এগুলো অবশ্যই
দেখবেন; বিশেষ করে যারা স্মার্ট-ফোন
কিনবেন। কারন RAM স্মার্ট-ফোনের জন্য
খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া এক্সটারনাল কত
জিবি ব্যবহার করতে পারবেন, তাও
দেখে নিবেন। ভালো পারফরমান্সের জন্য
RAM ১ জিবির নিচে হওয়া উচিৎ না।
৮. ভার্সনঃ যে ফোনটা কিনবেন, তা লেটেস্ট
ভার্সনে কিনা দেখে নিবেন। কারণ
লেটেস্ট ভার্সনে সুবিধা বেশি থাকে।
যেমন অ্যানড্রইয়েড হলে সেটা জেলিবিন
নাকি কিটক্যাঁট নাকি সেই ওল্ড ভার্সন
স্যান্ডউইচ-আইচক্রিম নাকি জিনজার-বার্ড
দেওয়া। সর্বশেষ ভার্সন ললিপপ আছে,
এগুলো ভালোভাবে দেখে নিবেন।
৯. প্রসেসরঃ স্মার্টফোন হলে কোন
প্রসেসরে চলে সেটা অবশ্যই দেখবেন।
স্পিডটা কত সেটাও দেখতে হবে।
১০. USB: অনেক ফোনে USB পোর্ট থাকে না।
এটা অনেক ঝামেলা করে, সেহেতু
এটা দেখে নিবেন, যে USB আছে কি নায়।
মোটামুটি এই ১০টি টিপস আপনার ফোন কেনার
আগে খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমার ব্লগের পাঠক
হিসেবে আরও দুইটি এক্সট্রা টিপস ফোন কেনার
আগে দেখে নেবার জন্য-
১১. ওয়ারেন্টীঃ ওয়ারেন্টী কত বছরের
এটা অবশ্যই খেয়াল করবেন এবং ওয়ারেন্টী কার্ড ভালভাবে দেখে নিবেন।
১২. ব্লু-টুথঃ ব্লু-টুথ আছে কিনা থাকলে কোন
ভার্সনে দেখতে হবে। সর্বোপরি কোন ব্রান্ডের, ভিডিও কোয়ালিটি কেমন, নেটওয়ার্ক ভালো পাই
কিনা, GPS আছে কিনা, E-MAIL করা যায়
কিনা, টকটাইম বেশি আছে কিনা, FM RADIO
আছে কিনা এগুলো দেখে কিনা উচিত।
সবশেষে ফোনটা দেখতে কেমন, কালার
কোনটা নিবেন এগুলো দেখেশুনে কিনা উচিত।
যাইহোক ফোন কিনতে আর অসুবিধা হবে না আশা করি।